প্রকাশিত: Sun, Dec 3, 2023 2:13 PM আপডেট: Sat, Dec 6, 2025 7:55 PM
আত্রাইয়ের দেশি মাছ সংকটে ভালো নেই শুঁটকিপল্লীর ব্যবসায়ীরা
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ): [২] নওগাঁর আত্রাইয়ে দেশি মাছ সংকটে শুঁটকি পল্লীতে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে। কাঙ্খিত লাভের মুখ দেখতে না পাওয়ায় অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে এবারে আত্রাইয়ে শুঁটকি উৎপাদন হচ্ছে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। অন্যান্য বছর এ মৌসুমে শুটকি উৎপাদনে ব্যাপক সরব থাকলেও এবারে নেই তাদের মাঝে আগ্রহ।
[৩] এ উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। পাশাপাশি রয়েছে আরও শতাধিক জলাশয়। এ বছর বন্যা না হওয়ায় আগেই নদী ও খালবিলের পানি কমে গেছে। জলাশয়ে মিলছে না দেশি প্রজাতির মাছ। এজন্য শুঁটকি উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।
[৪] স্থানীয় ও উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত স্থান সমুহের মধ্যে আত্রাইও একটি খ্যাত স্থান। প্রতিদিন শত শত টন মাছ আত্রাই থেকে রেল, সড়ক ও নৌ পথে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়। সে অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদনেও আত্রাইয়ের যথেষ্ট প্রসিদ্ধি রয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর, নিলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরসহ দেশের প্রায় ১৫/২০ জেলাতে বাজারজাত করা হয় আত্রাইয়ে শুঁটকি মাছ। আর এ মাছের শুঁটকি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় শতাধিক পরিবার। আত্রাইয়ের ভরতেঁতুলিয়া গ্রাম শুঁটকি তৈরীতে বিশেষভাবে খ্যাত। এ গ্রামের শতাধিক শুঁটকি ব্যবসায়ী এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত। শুধু বর্ষা মৌসুমে শুঁটকি তৈরি করে তারা পরিবারের সারা বছরের ভরণপোষণ নিশ্চিত করতেন।
[৫] কিন্ত এবাবে দেশি মাছের দাম বৃদ্ধির কারণে এসব শুঁটকি ব্যবসায়ীরা হাতাশ হয়ে পড়েছেন। কাঁচা মাছের আমদানি কম, বাজাররে মূল্য বেশি অথচ শুঁটকির বাজারে ধস। সবকিছু মিলে এবারে শুঁটকি ব্যবসায়য়ীরা কাঙ্খিত লাভ না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
[৬] আত্রাই উপজেলায় প্রতিবছর প্রায় ৬০০ টন শুঁটকি উৎপাদন হয়। আষাঢ়-শ্রাবণ মাস থেকে শুঁটকি তৈরি শুরু হয়, চলে পৌষ-মাঘ মাস পর্যন্ত।
[৭] উপজেলার শুঁটকি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের উত্তরের জেলা সৈয়দপুর, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, জামালপুর ও ঢাকায় সরবরাহ হয় নওগাঁর শুঁটকি। তবে প্রধান বাজার ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য। এই শুঁটকি প্রথমে সৈয়দপুর যায়। এরপর সেখান থেকে ট্রেনযোগে রপ্তানি করা হয় ভারতে। তবে গতবছর বন্যা না হওয়ায় এবং খাল-বিলের পানি শুকিয়ে আসায় দেশিয় মাছে উৎপাদন কমে গেছে। এতে শুটকি উৎপাদন নিয়ে হতাশায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
[৮] উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বর্ষা মৌসুমে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে কেউ যাতে মাছ শিকার করতে না পারে এর জন্য আমরা ব্যাপক আভিযান পরিচালনা করেছি। অনেক জাল আটক করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারপরও বিলম্বিত বন্যার কারনে মাছের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সরকারিভাবে শুঁটতি উৎপাদনকারীদের উৎসাহ প্রদান করছি।